শুভ্র প্রথমে তার ভাগনের চোখে ‘হিমু মামা’ হয়ে উঠতে শুরু করে। এরপর ধীরে ধীরে পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছেও সে অদ্ভূত আচরনের যুবক ‘হিমু’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। কিন্তু সে নিজে মনে করে সে পুরোপুরি হিমু হয়ে উঠতে পারেনি, এ জন্য অধ্যবসায় প্রয়োজন। শুভ্রকে হিমু হয়ে উঠতেই হবে কেন? লজিক কী! হুমায়ূন আহমেদের অনবদ্য উপন্যাস 'হিমু মামা'। প্রিয় পাঠক, আপনি প্রবেশ করছেন হিমুর পাগলামির জগতে, যেখানে আছে যুক্তি ও যুক্তি খণ্ডনের অন্যরকম এক খেলা।
প্রধানত তিনজন পিঁপড়া কর্মীদের কষ্ট নিয়ে পিঁপড়া জগতের গল্প এগিয়েছে ‘শিপরা নামের পিঁপড়া’য়। তিন কর্মী শিপরা, ইপরা, টিপরা অনেক পরিশ্রম করে। তারা রানীর সেবা করে। অনেক কষ্ট করে পিঁপড়া জীবন যাপন করে। কিন্তু তারপরও তারা রানীকে খুশি করতে পারে না। এমন গল্প নিয়ে রচিত এই বইটিতে আনিসুল হক পিঁপড়াদের যাপনের মধ্যে দিয়ে নতুন একটি জীবন যুদ্ধের কথা তুলে ধরেছেন।
ফরাসত আলী ত্রিশ লক্ষ টাকার লটারি পেয়ে বাচ্চাদের জন্য একটা স্কুল তৈরির পরিকল্পনা করেন। এর সঙ্গে যুক্ত হলেন হারুন ইঞ্জিনিয়ার। তার আবিষ্কৃত বিশেষ ধরনের প্লাস্টিক ‘প্লাস্টিজনা’ দিয়ে স্কুলের বিল্ডিং তৈরি করবেন। স্কুল ঘরটি তৈরি করার সময় ঝড়ের পূর্বাভাস ছিলো। তাই দ্রুতগতিতে তৈরি করতে গিয়ে দেখা গেলো স্কুলটি একদিকে কাত হয়ে গেছে। নামকরণ হলো ‘পথচারী মডার্ণ স্কুল’। পথেঘাটে ঘুরে বেড়ানো শিশুরা এই স্কুলে পড়াশুনা করবে। পথচারী শিশুদের মজার মজার কাণ্ড মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘স্কুলের নাম পথচারী’ রচনাটিকে প্রাণবন্ত করেছে।
‘হ-য-ব-র-ল’ ননসেন্স ধারার লেখা। সাহিত্যবোদ্ধারা একে ‘এলিস ইন দ্য ওয়ান্ডারল্যান্ড’র সাথে তুলনা করেছেন। একজন কম বয়সী ছেলের ঘুম থেকে ওঠার মধ্য দিয়ে গল্প শুরু হয়। গরমে ঘাম মুছতে গিয়ে সে দেখলে রুমালটা বিড়াল হয়ে গেছে। বিড়ালটার সাথে কথাবলা শুরু করে। তারপর উদো আর বুদো, ব্যাকরন শিং, হিজিবিজবিজ, নেড়া, সজারু, প্যাঁচাসহ আরও অনেক চরিত্রের প্রবেশ ঘটে। বাড়তে থাকে বিশৃঙ্খলা।
নকল বাবা-মার কাছে বেড়ে উঠছে রনি। এতে তার খুব বেশি খারাপ লাগা নেই। আসল মা-বাবা মারা যাওয়ার পর নকলদের কাছে বড় হচ্ছে সে, এও কী কম পাওনা! তারপরও অল্প খারাপ লাগা আছে। এক গাদা শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়া, নাস্তার টেবিলে অভিভাবকদের কঠিন কথা শোনা- এগুলো ওর কাছে বিরক্তিকর। ভাগ্যক্রমে রনির নামে বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি ও টাকার পরিমান অনেক বেশি। অনেক মানে, ‘বেশুমার’ লেভেলের বেশি।
মুহাম্মদ জাফর ইকবালের কিশোর উপন্যাসগুলো পড়তে পড়তে যে কারো স্কুলজীবনের দুর্ধর্ষ দিনগুলোর কথা মনে পড়বে। তার লেখা ‘দুষ্টু ছেলের দল’ উপন্যাসেও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানেও কিশোর কালের বন্ধুত্ব, বিলুর মত দুষ্টু ছেলের কিছু করে দেখানোর ক্ষমতা, আবিষ্কারের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা টিপু আর জীবনময়ের রয়েছে জীবনানন্দ দাশ হয়ে উঠতে চাওয়া। তার লেখা ‘দুষ্টু ছেলের দল’ উপন্যাস ছোট ছেলেগুলো যেভাবে হাসিয়েছে তেমনই থমকে দিয়েছে সত্যবাদিতা, সাহস, ইচ্ছাশক্তিতে। কিন্তু ছেলেদের হাসিমুখগুলো দেখলে বোঝা যায় না তাদের জীবনে কতটা দুঃখ জড়িয়ে আছে। এবং বিলু চরিত্রের যে ভেতরকার কষ্ট সেটা তার হাসি মুখ দেখে কখনোই বুঝা যায় না। লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এমন কয়েকটি দুষ্টু চরিত্রের মাধ্যমে জীবনের গভীরে থাকা জীবনকে দেখিয়েছেন।
শিশুসাহিত্যিক বলতে যা বুঝায়, বাংলাদেশের সাহিত্যমণ্ডলে আলী ইমাম নামটি যেন ঠিক তারই সমার্থক। তিনি জনপ্রিয় অনেক শিশু-কিশোর সাহিত্য রচনার মাধ্যমে নিজস্ব অবস্থান তৈরি করেছেন। তার রচিত ‘গল্পগুলো আতঙ্কের’ বইটিতে আটটি গল্প সংকলিত হয়েছে। এই বইয়ের প্রতিটি গল্পই আলাদা আলাদা ঢঙে লেখা হয়েছে। যার মধ্যে পাঠকদের কৌতূহল ভাবের উদয় হবে। প্রতিটা গল্পে যুক্ত রয়েছে আতঙ্কের ঘটনা। রয়েছে অদ্ভুত রহস্যময় ঘটনা।
একটি ছোট্ট উপন্যাস আর একটি উপন্যাসিকা নিয়ে এই বই। উপন্যাসিকার নামেই এই গ্রন্থের নামকরন- ‘দ্বীপ’। দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার গল্পকে এক মলাটে বন্দি করা হয়েছে। একটি উপন্যাস মনে হবে সমসাময়িক গুম এবং রাজনৈতিক হত্যা নিয়ে। আর দ্বিতীয়টি সত্য মিথ্যা মিলিয়ে কিছুটা প্রাচীন সময়ের গল্প। দুটোই কাল্পনিক। কিন্তু কোনোভাবেই ঘটনাদুটোকে অবাস্তব বলা যাবে না।
‘আধুনিক ঈশপের গল্প’ বইটিতে মুহম্মদ জাফর ইকবাল নতুন করে লিখেছেন ঈশপের চিরাচরিত বিখ্যাত গল্পগুলো। সেই শিক্ষামূলক গল্পগুলোকে লেখক লিখেছেন বর্তমান প্রেক্ষাপটে। মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার এই বইটি নিয়ে বলেছেন, ‘এ দেশে, এ সময়ে যদি ঈশপের জন্ম হত তা হলে তার গল্পগুলি কেমন হত? ব্যাপারটা কারো জানার কথা নয়, তাই এখানে একটু কল্পনা করে দেখেছি, তার বেশী কিছু নয়।’
‘শহরে অদ্ভুত জন্তু’ একটি কিশোর রহস্য উপন্যাস। এক অদ্ভুত জন্তুর ভয়ে সারা শহর মৃতপ্রায়। নির্জন রাস্তা। ঘন অন্ধকার। ক্রাচে ভর দিয়ে বেরিয়ে পড়েছে রাজু। ক্লাস সিক্সে পড়ে সে। ওর একটা পা নেই। এক জলপাই রঙের ট্রাক কেড়ে নিয়েছে ওর পা। অকুতোভয় রাজু উন্মোচন করতে চায় জন্তুর রহস্য। ওর সঙ্গে যোগ দিয়েছে আরো দু’জন- বাবলু আর মনজু। গভীর রাতে ভয়ের অন্ধকার চিরে শহরের পথে পথে হাঁটছে তিন বালক। খুঁজে ফিরছে জন্তু রহস্য।
আহসান হাবীবের শিশু-কিশোরদের গল্পের বই ‘গল্পগুলো ভূতুড়ে’। সাধারণত ভূতের গল্পগুলোতে যেমন অদৃশ্য অশীরী আত্মার নানান রোমহর্ষক ঘটনার বর্ননা থাকে, এই বইটি তার ব্যতিক্রম। অশরীরীর চেয়ে লেখক এখানে অনেকটাই বিজ্ঞানমনস্ক গল্পের ঝাঁপি খূলেছেন। আপাতত দৃষ্টিতে গল্পগুলো ভূতুড়ে গল্পের মতো মনে হলে এর গভীরে রয়েছে মানুষের অদ্ভুত মনের নানা খেলার মনস্তাতিক চিন্তার সূত্রপাত। আশাকরি সববয়েসী পাঠকই বইটি পড়ে আনন্দ পাবেন।
‘হাফ ডজন অ্যাডভেঞ্চার’ প্রতিটি গল্পই পাঠককে নিজের জীবনের কৈশোরের থ্রিল মাখা সময়ের কথা মনে করিয়ে দিবে। অথবা কোনো কিশোর এই বই পাাঠ করতে করতে নিজের মধ্যে লুকিয়ে থাকা একজন কিশোর থ্রিলারকেও আবিষ্কার করে ফেলতে পারে! এই বইয়ে সংকলিত ছয়টি গল্পই ভিন্ন স্বাদের। যা পাঠ করে কিশোর মনের মধ্যে জাগ্রত হওয়া অনেক জিজ্ঞাসারও জবাব খুঁজে পাওয়া যায়। লেখক এই বইয়ের ভূমিকায় লিখেছেন, ‘ছোটবেলায় আমরা ছিলাম স্বাধীন। আমাদের বাবা-মা’রা আমাদের এত খোঁজখবর করতেন না। সন্ধ্যার আগে বাসায় ঢুকলেই হলো। আর সেই সুযোগে আমরা পাড়ায় বেপাড়ায়...নানা রকম অ্যাডভেঞ্চার করে বেড়াতাম। তখন এসব খেলা হিসেবেই নিয়েছিলাম। এখন বুঝি সেগুলোর কোনোকোনোটা বেশ বিপজ্জনক ছোট-বড় নানা রকম অ্যাডভেঞ্চারই কিন্তু ছিল। কে জানে সেই সব ছেলেবেলার অ্যাডভেঞ্চারগুলোর ছায়ায়ই হয়তো-বা লিখে ফেলেছি এই হাফ ডজন অ্যাডভেঞ্চার কাহিনি।’
সুকুমার রায় বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে একটি বিস্ময়কর নাম। তার রচিত ছড়া সবার মুখে মুখে গ্রাম বাংলার প্রান্তিক মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে। লেখকের বহুমুখী প্রতিভার অনন্য প্রকাশ তার অসাধারণ ননসেন্স ছড়াগুলোতে। সুকুমার রায়ের প্রথম ও একমাত্র ননসেন্স ছড়ার বই আবোল তাবোল শুধু বাংলা সাহিত্যে নয়, বিশ্বসাহিত্যের অঙ্গনে নিজস্ব জায়গার দাবিদার। সেসব ছড়া থেকে প্রকাশ করা হয়েছে ‘সুকুমার রায়ের নির্বাচিত ছড়া’ বইটি।
Items Showing 1 to 21 from 21 books results