বইটি নিয়ে লেখকের ভাষ্য, ‘অন্য দশজন যখন স্বল্পকালীন ভ্ৰমণে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের খোলস দেখে মোহগ্ৰস্ত বা বিভ্রান্ত হয়ে যান, আমি তখন খোলস ভেদ করে সেখানকার সত্যিকার জীবনপ্রবাহের কাছাকাছি চলে যেতে পারি। সেই দেশটি আমার কাছে এখন আর বিদেশ নয়, সেই দেশের মানুষ বিদেশি নয়- আমি তাদের বুঝতে পারি, অনুভব করতে পারি। তাই এই গ্ৰীষ্মের শুরুতে ছয় সপ্তাহের জন্যে যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে হঠাৎ ইচ্ছে করল দেশটিকে নিয়ে লিখতে। লেখা শেষ হলে আবিষ্কার করেছি, দেশ নয়- লেখা হয়েছে দেশের মানুষকে নিয়ে। ভ্ৰমণকাহিনীতে যা থাকার কথা তা কিছু এখানে নেই, যা থাকার কথা নয় তা-ই দিয়ে পৃষ্ঠা ভরে রেখেছি! লেখাটিতে নানা বিষয়ে অসম্পূর্ণতা থাকতে পারে, নানা ধরনের অসংগতি থাকতে পারে, তবে যে-মানুষগুলির কথা বলেছি তাদের প্রতি আমার আন্তরিকতায় এতটুকু খাদ নেই। যে দেশের মানুষ আমাকে স্বদেশ এবং স্বজন থেকে বহুদূরে বুক আগলে রেখেছিল তাদের জন্যে আমার ভিতরে গভীর ভালোবাসা ছাড়া আর কিছু নেই।’
‘এবং প্যারিস’ মূলত এক মলাটে দুটি বই। দুটিই ভ্রমণ কাহিনী। একটি ‘গিমে পর্ব’, অন্যটি ‘এবং প্যারিস’। গিমে জাদুঘরের ইতিহাস, তার জন্মকথা ও কর্মকান্ড এবং মিউজিয়ামের ধারণা কীভাবে মানবজাতির মধ্যে এসেছে, তার জন্ম-ইতিহাস সম্পর্কে একটি বিশদ ধারনা পাওয়া যাবে বইয়ের প্রথম অর্ধাংশজুড়ে। ফিলিপ স্টার্নের রবীন্দ্ৰদৰ্শন কোথায় ঘটেছিলো, বুলনে আলবার্ত কানের ওই বাগানবাড়িতে, নাকি গিমের রবীন্দ্র-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে? এ রকম পুরনো কিছু প্রশ্নের মীমাংসা করারও চেষ্ট করা হয়েছে প্রথম অংশে। ‘এবং প্যারিস’ অংশে কবিকন্যা মৃত্তিকার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। দু’জনের অনুভূতি ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লেখা। এই পর্বটির বিশাল অংশ জুড়ে আছে ফরাসি বিপ্লব ও কবিকে লেখা অনেকগুলো চিঠি এবং তার জবাব। বইটি ভ্রমণপিয়াসী, জ্ঞানপিপাসু পাঠকের প্যারিস-আগ্রহকে আরো বাড়িয়ে তুলবে।
Items Showing 1 to 4 from 4 books results