স্বপ্ন আর বাস্তবের বিভ্রমে পড়ে খুন হয় সুবর্ণা। অচিনের উদ্দেশে স্টিমারে ওঠে মুনতাসির। ঘোর-লাগা চন্দ্ররাত্রিতে সমুদ্রের ঘাই খেয়ে ঝলসে উঠা ঢেউ দেখতে দেখতে ঘাড়ে পূর্বাশার নিঃশ্বাসের গন্ধ অনুভব করে। অপরূপা পূর্বাশার সঙ্গে নানা কথোপথনের দীর্ঘ যাত্রা চলতে থাকে। সুবর্ণার পিঠাপিঠি পালিত ভাই অপুর প্রতি সুবর্ণার বাড়াবাড়ি প্রগাঢ় মায়া ভালোবাসাকে সবাই সন্দেহের চোখে দেখে। মুনতাসিরের হাতে অস্ত্র ওঠে সেই কারণেই। এইসব দিক চক্রে মুনতাসির যেখানে পৌঁছায় সেখানেও তার দেখা হয় আরেক অথবা একই সুবর্ণার সঙ্গে। সুররিয়ালিস্টিক এই উপন্যাসটি কখনো সত্যের মতো মিথ্যা, কখনো মিথ্যার মতো সত্যে আক্রান্ত।
কবি মারুফুল ইসলামের রচনা বৈচিত্র্য ও বৈভবে বিপুল। তাঁর কাব্যপ্রবাহ এক খরস্রোতা নদী। বাঁধনহারা। দুকূলপ্লাবী। লক্ষ্যাভিসারী। সৃষ্টিশীলতার বরপুত্র তিনি। সময়ের অগ্রণী দূত। বয়ে নিয়ে আসেন নিত্যনতুন বার্তা- হৃদয়ের, মননের, জীবনের। তাঁর কবিতা ক্রমাগত খুলে দিতে থাকে অজানা অচেনা সব দরজা।
সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া নানারকম ঘটনা খুবই শৈল্পিকভাবে গল্পে তুলে এনেছেন লেখক। তাঁর এই গল্পগ্রন্থে ছয়টি গল্প আছে। কোনও গল্পে শতবর্ষের কাছাকাছি বয়সের মা এবং ষাট অতিক্রম করা ছেলের কাহিনি, কোনও গল্পে বহু বহু বছর পর বড় ব্যবসায়ী ছেলের মনে পড়েছে কিশোর বয়সে বন্ধুর বাবার কাছে শোনা তার বাবার এক ঋণের কথা, কোনও গল্পে গ্রামের নির্জন কবরের পাশে পড়ে থাকা জ্যান্ত শিশু...‘ফেলে যাওয়া রুমালখানি’ জীবনের এই রকম ছয়টি দিকে নিয়ে যাবে পাঠককে।
মাজহারুল ইসলামের গল্পের জগৎ পাঠকের চেনা। প্রথমে এমনই মনে হয়। ঘটনা, চরিত্র সবই যেন জানা। কিছু পরেই যদিও পাঠক স্পষ্ট বোঝেন না, অমন নয়, সবই গল্পকারের নিজ জীবন থেকে তুলে আনা। তিনি তাকে না-দেখালে কিছুই চোখে পড়ত না। ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জগতের সমস্ত শব্দ-বর্ণ-গন্ধ কি অতীন্দ্রিয় জীবনের নানা বোধও তাঁর চেতনার কুঠুরিতে সঞ্চিত হয়। লেখকই পারেন তার নির্যাসটুকু পাঠকের হাতে তুলে দিতে। সাতটি গল্পের এই সংকলন জীবন ও জগতের নানা কথা বলে। ব্যক্তিগত কি পারিবারিক দুঃখ-শোক-যন্ত্রণা অথবা রাজনৈতিক বৈকল্যের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধসঞ্জাত ক্রোধ ও বেদনার পরম আলেখ্য হয়ে দাঁড়ায়।
হুমায়ূন আহমেদ—কিংবদন্তি শিল্পস্রষ্টা। প্রয়াণের এত বছর পরও তাঁর সৃষ্টি একইরকম জনপ্রিয়, তাঁর সম্পর্কে তীব্র কৌতূহল ভক্ত-অনুরাগীদের। বোদ্ধারা তাঁর শিল্পসৃষ্টির অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করবেন। এই গ্র্রন্থের লেখক সে-পথে যান নি। তিনি খুব কাছ থেকে, বলা যায় ছায়াসঙ্গী হয়ে, দেখেছেন এই মহান শিল্পস্রষ্টাকে, বিরতিহীনভাবে প্রায় পনেরো বছর। দেখেছেন এবং বোঝার চেষ্টা করেছেন। লেখকের দেখা আর বোঝার মধ্য দিয়ে ব্যক্তি হুমায়ূন আহমেদ অনেকখানি প্রকাশ্য হয়ে উঠবেন এই গ্রন্থে। ‘গর্তজীবী’ হুমায়ূন আহমেদ সীমাবদ্ধ আপন গণ্ডির বাইরে বেরুতেন না কখনো। তাই ব্যক্তিমানুষটি সম্পর্কে বাইরের তথ্য আছে খুব সামান্যই। বিভিন্ন ধরনের কিছু লেখার সমন্বয়ে এই গ্রন্থ নিভৃতচারী এই মানুষটি সম্পর্কে আমাদের স্বচ্ছ ধারণা দেবে, মেটাবে অনেক কৌতূহল।
প্রায় একই সময়ে একই শহরে বসবাস করে, একই ধরনের কর্মে রত থাকার পরও কেউ কারও সম্পর্কে একটি কথাও বলেন নি বা কিছু লেখেন নি!এমন কি কেউ কারও সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করেন নি। অথচ এই দুজনেই বাংলার দুই অবিস্মরণীয় ও সৃজনশীল ব্যক্তিত্ব। তাঁরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। রবীন্দ্রনাথ যখন নোবেল পুরস্কার লাভ করেন, বাংলায় বেগম রোকেয়ার খ্যাতি তখন মধ্য গগণে। অথচ এই পরম সময়েও তাঁদের যোগাযোগ ঘটেনি। অনুসন্ধিৎসু জনের মনে এই প্রশ্ন উঠতেই পারে, কেন এমন ঘটেছিল? ‘রোকেয়া ও রবীন্দ্রনাথ কাছে থেকেও দূরে’ গ্রন্থে পূরবী বসু এই বিস্ময়কর ঘটনাটি নানা দিক থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং নানা উপাত্ত সহকারে বিশ্লেষণ করেছেন।
Items Showing 1 to 7 from 7 books results