মুহাম্মদ জাফর ইকবালের কিশোর উপন্যাসগুলো পড়তে পড়তে যে কারো স্কুলজীবনের দুর্ধর্ষ দিনগুলোর কথা মনে পড়বে। তার লেখা ‘দুষ্টু ছেলের দল’ উপন্যাসেও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানেও কিশোর কালের বন্ধুত্ব, বিলুর মত দুষ্টু ছেলের কিছু করে দেখানোর ক্ষমতা, আবিষ্কারের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা টিপু আর জীবনময়ের রয়েছে জীবনানন্দ দাশ হয়ে উঠতে চাওয়া। তার লেখা ‘দুষ্টু ছেলের দল’ উপন্যাস ছোট ছেলেগুলো যেভাবে হাসিয়েছে তেমনই থমকে দিয়েছে সত্যবাদিতা, সাহস, ইচ্ছাশক্তিতে। কিন্তু ছেলেদের হাসিমুখগুলো দেখলে বোঝা যায় না তাদের জীবনে কতটা দুঃখ জড়িয়ে আছে। এবং বিলু চরিত্রের যে ভেতরকার কষ্ট সেটা তার হাসি মুখ দেখে কখনোই বুঝা যায় না। লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এমন কয়েকটি দুষ্টু চরিত্রের মাধ্যমে জীবনের গভীরে থাকা জীবনকে দেখিয়েছেন।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৯৫২ সালে সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং কলাম-লেখক। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন থেকে পিএইচ-ডি ডিগ্রী নেন ১৯৮২ সালে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই তিনি লেখালেখি করেন। একাধারে লিখে যাচ্ছেন উপন্যাস, ছোট গল্প, কিশোর উপন্যাস, কিশোর গল্প, শিশুতোষ গল্প, ভৌতিক গল্প, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি, ভ্রমণকাহিনি, মুক্তিযুদ্ধ এবং বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ক লেখা। তবে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি ও কিশোর উপন্যাসগুলোর জন্য তিনি নবীন প্রজন্মের কাছে অসাধারণ জনপ্রিয় একজন লেখক হিসেবে সুপরিচিত। লেখালেখির জন্য বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। বাংলা সাহিত্যের আরেক জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর বড় ভাই। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ- রঙিন চশমা, অন্যজীবন, ছোটদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, দীপু নাম্বার-টু ইত্যাদি।