0
বায়োগ্রাফি : আলাওল, পূর্ণনাম সৈয়দ আলাওল (১৬০৭-১৬৭৩), ছিলেন মধ্যযুগের একজন বাঙালি কবি।বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে ধর্মীয় বিষয়বস্তুর গতানুগতিক পরিসীমায় রোমান্টিক প্রণয়কাব্যধারা প্রবর্তনকারী হিসাবে মুসলমান কবিগণের অবদান সর্বজনস্বীকৃত। এ সময়ে তারা আরবি ফার্সি ও হিন্দি সাহিত্যের বিষয়বস্তু ও ভাববৈচিত্র্য অবলম্বনে কাব্য রচনায় এক নবযুগ সৃষ্টি করেন। এপর্যায়ের কবিগণের মধ্যে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের বিচারে কবি আলাওলকে সর্বোচ্চ স্থান দেওয়া হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] আলাওল আরাকান রাজসভার অন্যতম কবি হিসাবে আবির্ভূত হলেও মধ্যযুগের সমগ্র বাঙালি কবির মধ্যে 'শিরোমণি আলাওল' রূপে শীর্ষস্থান অধিকারী। আরবি ফার্সি হিন্দি ও সংস্কৃত ভাষায় তিনি সুপণ্ডিত ছিলেন। ব্রজবুলি ও মঘী ভাষাও তার আয়ত্তে ছিল। প্রাকৃতপৈঙ্গল, যোগশাস্ত্র, কামশাস্ত্র, অধ্যাত্মবিদ্যা, ইসলাম ও হিন্দু ধর্মশাস্ত্র-ক্রিয়াপদ্ধতি, যুদ্ধবিদ্যা, নৌকা ও অশ্ব চালনা প্রভৃতিতে বিশেষ পারদর্শী হয়ে আলাওল মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য প্রতিভার পরিচয় দিয়েছন। কবি সৈয়দ আলাওল আনুমানিক ১৬০৭ সালে তৎকালীন মাদারীপুর জেলার ফতেয়াবাদে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে মাদারীপুরের জালালপুরে অবস্থিত। তার পিতা ছিলেন ফতেয়াবাদের শাসনকর্তা মজলিশ এ কুতুবের অমাত্য। জলপথে চট্টগ্রাম যাওয়ার সময় আলাওল ও তার পিতা পর্তুগিজ জলদুস্যুদের দ্বারা আক্রান্ত হন ও তার পিতা জলদস্যুদের হাতে নিহত হন। অতপর তিনি জলদস্যুদের হাতে পরে ক্রীতদাস হিসাবে আরাকানে নীত হন। তার জীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে আরাকানে। তিনি আরাকান রাজ সাদ উমাদার এর অশ্বারোহী সেনাবাহিনীতে ভর্তি হন। তার কাব্যপ্রতিভার পরিচয় পাওয়া গেলে একসময় তিনি হয়ে পড়েন রাজসভার কবি। তাকে কাব্যচর্চায় বিশেষভাবে উৎসাহিত করেন রাজার একজন প্রধান কর্মচারী মাগন ঠাকুর।